জ্বর
জ্বর | |
---|---|
জ্বর (যা পাইরেক্সিয়া নামেও পরিচিত[১]) হচ্ছে শারীরিক অসুস্থতার অন্যতম প্রধান লক্ষ্মণ, যা শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রার সীমার ৩৬–৩৭.২ °সে (৯৬.৮–৯৯.০ °ফা) অধিক তাপমাত্রা নির্দেশ করে।[২]
শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি সত্ত্বেও সাধারণত ঠান্ডা অনুভূত হয়। উচ্চ নির্দিষ্ট সূচক (set point) থেকে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হলে গরম অনুভূত হয়।
অনেক কারণেই জ্বর হতে পারে। কিছু তথ্য থেকে জানা যায় উচ্চ তাপমাত্রায় শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়, যদিও, জ্বরের উপকারিতা নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। তবে অ্যান্টিপাইরেটিক ওষুধ ব্যবহার করে জ্বর কমানো যায়।
অনিয়ন্ত্রিত হাইপারথার্মিয়ার সাথে জ্বরের পার্থক্য আছে;[১] সেটা হল, হাইপারথার্মিয়া দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রক সূচকের অতিরিক্ত তাপমাত্রার ফল।
সংজ্ঞা
[সম্পাদনা]তাপমাত্রার শ্রেণীবিভাগ | |
---|---|
নিম্ন তাপমাত্রা | <৩৫.০ °সে (৯৫.০ °ফা)[৩] |
স্বাভাবিক | ৩৬.৫–৩৭.৫ °সে (৯৭.৭–৯৯.৫ °ফা)[২] |
জ্বর | >৩৭.৫–৩৮.৩ °সে (৯৯.৫–১০০.৯ °ফা)[১][৪] |
উচ্চ তাপমাত্রা | >৩৭.৫–৩৮.৩ °সে (৯৯.৫–১০০.৯ °ফা)[১][৪] |
হাইপারপাইরেক্সিয়া | >৪০.০–৪১.৫ °সে (১০৪.০–১০৬.৭ °ফা)[৫][৬] |
উল্লেখ্য: জ্বর এবং উচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য কৌশলগত | |
শরীরের উষ্ণতা বৃদ্ধি (>৯৮.৬ o ফাঃ) । বিভিন্ন রোগে এই উপসর্গ দেখা মানুষের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রার সীমা বেশ বড়। মানুষের দেহের তাপমাত্রা কোনো ক্রমেই ৯৫ o ফাঃ এর কম বা ১১০ o ফাঃ এর বেশি হতে পারে না। তার দেহের তাপমাত্রা মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রিত উচ্চ নির্দিষ্ট সূচক(set point)থেকে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হলে এবং
•পায়ুপথের তাপমাত্রা ৩৭.৫-৩৮.৩°সে. বা তার বেশি হলে [৭]
•মুখের তাপমাত্রা ৩৭.৭°সে. বা তার বেশি হলে [৭]
•বাহু বা কানের তাপমাত্রা ৩৭.২° সে. বা তার বেশি হলে [৭]} তা জ্বর বলে গণ্য হয় ।
একজন সুস্থ মানুষের জন্য মুখে ৩৩.২-৩৮.২° সে., পায়ুপথে ৩৪.৪-৩৭.৮° সে.,কান পর্দায় ৩৫.৪-৩৭.৮°সে. এবং বগলে ৩৫.৫-৩৭.০° সে. ই হল স্বাভাবিক তাপমাত্রা। দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা অনেকগুলো বিষয়ের ওপর নির্ভর করে যেমন বয়স, লিঙ্গ, সময় ,পারিপার্শ্বিক তাপমাত্রা, কাজের মাত্রা ইত্যাদি। তাপমাত্রা বৃদ্ধি মানেই জ্বর নয়। একজন সুস্থ লোক যখন ব্যায়াম করে তখন তার দেহের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে কিন্তু তা জ্বর হিসেবে গণ্য হবে না যেহেতু তার মস্তিষ্কে নিয়ন্তিত নির্দিষ্ট সূচক (set point) স্বাভাবিক। অন্য দিকে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ও কারও জন্য জ্বর হিসেবে গণ্য হতে পারে। যেমনঃ অসুস্থ রোগীর (যে দেহের তাপ উৎপাদনে দুর্বল) ৩৭.৩° সে. ই জ্বর হিসেবে গণ্য হবে। [তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
প্রকারভেদ
[সম্পাদনা]তাপমাত্রা পরিবর্তনের ধরন রোগের উপর নির্ভরশীল: জ্বর এর পরিবর্তনের ধরন থেকেই কখনো কখনো রোগ নির্ণয় সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যেতে পারেঃ
•একটানা জ্বরঃ সারাদিন ধরে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে এবং ২৪ ঘণ্টায় ১0 সে. এর বেশি তাপমাত্রার পরিবর্তন হয় না। যেমনঃ লোবার নিউমোনিয়া, টাইফয়েড, মূত্রনালির ইনফেকশন, ব্রুসেলসিস, টাইফাস ইত্যাদি রোগের ক্ষেত্রে একটানা জ্বর পরিলক্ষিত হয়। টাইফয়েড রোগের ক্ষেত্রে জ্বরের একটি নির্দিষ্ট আঙ্গিক দেখা যায়। জ্বর ধাপে ধাপে বাড়ে এবং উচ্চ তাপমাত্রা অনেকক্ষণ থাকে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
•নির্দিষ্ট বিরতিতে জ্বরঃ জ্বর একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাড়ে এবং পরে তাপমাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যায়, যেমনঃ ম্যালেরিয়া, কালাজ্বর (kala-azar), পাইয়েমিয়া, সেপ্টিসেমিয়া (রক্তের সংক্রমন)। এর প্রকারভেদগুলো হলঃ
*কুয়োটিডিয়ান জ্বর, যার পর্যায়কাল হল ২৪ ঘণ্টা, সাধারণত ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায়।
*টারশিয়ান জ্বর, যার পর্যায়কাল ৪৮ ঘণ্টা, এটিও ম্যালেরিয়ার ক্ষেত্রে দেখা যায়।
*কোয়ার্টান জ্বর, যার পর্যায়কাল ৭২ ঘণ্টা, এটি দেখা যায় Plasmodium malariae জীবাণুর ক্ষেত্রে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
•স্বল্প বিরতিতে জ্বরঃ শরীরের তাপমাত্রা সারদিন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে এবং ২৪ ঘণ্টায় ১0 সে. এর চেয়ে বেশি উঠা নামা করে। যেমনঃ infective endocarditis.
•Pel-Ebstein জ্বরঃ এই বিশেষ ধরনের জ্বরটি হজকিন লিম্ফোমা এর ক্ষেত্রে দেখা যায়। জ্বর এক সপ্তাহ বেশি, এক সপ্তাহ কম- এভাবে চলতে থাকে। তবে আদৌ এ ধরনের জ্বর বিদ্যমান কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।
দেহের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অবর্তমানে এক ধরনের জ্বর দেখা যায় যাকে বলা হয় "ফিব্রাইল নিউট্রোপেনিয়া " ।এক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোধী নিউট্রোফিল এর অভাবে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমন তাড়াতাড়ি ছড়িয়ে পরে। তাই এই রোগের জরুরি চিকিৎসা প্রয়োজন। যেসব রোগীর কেমোথেরাপি চিকিৎসা চলছে যা কিনা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় তাদের ক্ষেত্রে এই রোগ বেশি দেখা যায়।
Febricula, এটি একটি প্রাচীন শব্দ যা এমন ধরনের জ্বরের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় যখন তাপমাত্রা বেশি উঠে না এবং বিশেষ করে যখন জ্বরের কারণ অজানা থাকে। এ ধরনের জ্বর থেকে রোগী এক সপ্তাহে সেরে ওঠে।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]
===হাইপারপাইরেক্সিয়া===এক্ষেত্রে জ্বর ১০৫৹F এর উপরে থাকে।
হাইপারথার্মিয়া
[সম্পাদনা]লক্ষ্মণ
[সম্পাদনা]জ্বরের সাথে সাধারণত অসুস্থ্ ভাব যেমন অবসন্নতা, ক্ষুধামান্দ্য, ঘুম ঘুম ভাব, শরীরে ব্যাথা, মনোযোগ দিতে না পারা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। [৮][৯][১০]
বিভিন্ন রোগ নির্ণয়
[সম্পাদনা]জ্বর থেকে বিভিন্ন প্রকার রোগ নির্ণয় করা যায়,যেমন
- সংক্রমণ রোগ - ইনফ্লুয়েঞ্জা, HIV,ম্যালেরিয়া,ইবোলা, আন্ত্রিক রোগ।
- ত্বকে সংক্রমণ
- প্রতিরক্ষাজনিত (Immunological) রোগ - সারকয়ডসিস,অটোইম্যুন হেপাটাইটিস।
- টিস্যু ক্ষয়ে যাওয়া -হিমোলাইসিস,সার্জারি,মস্তিষ্ক রক্তক্ষরণ।
- ক্যান্সার-বৃক্কে ক্যান্সার,লিউকেমিয়া
প্রতিকার
[সম্পাদনা]জ্বর যদিও কোন রোগ নয়, এটিকে বড় কোন রোগের লক্ষন বলা যেতে পারে।কিন্তু ভাইরাস জনিত জ্বরের ক্ষেত্রে রোগীকে কিছু পরামর্শ প্রদান করা যেতে পারে। যেমন -
- রোগীর শরীর যদি খুব বেশি উতপ্ত থাকে তাহলে তার শরীর কে ঠাণ্ডা রাখার বাবস্থা করতে হবে।রোগীর শরীরকে সর্বদা মুছে দিতে হবে যাতে রোগীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
- রোগীর হাত এবং পায়ের তলা মুছে দিতে হবে। এতে রোগী স্বস্তি অনুভব করবে ।
- রোগীকে একটু খোলা জায়গাতে রাখতে হবে যাতে করে রোগী আরও দ্রুত সুস্থ হয়ে যাবে ।
- এছাড়াও শরীর ব্যথায় পথ্য হিসেবে প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ গ্রহণ করা যেতে পারে।
রোগতত্ত্ব
[সম্পাদনা]ইতিহাস
[সম্পাদনা]অন্যান্য প্রাণীদের জ্বর
[সম্পাদনা]তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ ক খ গ ঘ Axelrod YK, Diringer MN (মে ২০০৮)। "Temperature management in acute neurologic disorders"। Neurol Clin। 26 (2): 585–603, xi। ডিওআই:10.1016/j.ncl.2008.02.005। পিএমআইডি 18514828। উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "NC08" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে - ↑ ক খ Karakitsos D, Karabinis A (সেপ্টেম্বর ২০০৮)। "Hypothermia therapy after traumatic brain injury in children"। N. Engl. J. Med.। 359 (11): 1179–80। ডিওআই:10.1056/NEJMc081418। পিএমআইডি 18788094। উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়; আলাদা বিষয়বস্তুর সঙ্গে "pmid18788094" নামটি একাধিক বার সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে - ↑ Marx, John (২০০৬)। Rosen's emergency medicine: concepts and clinical practice। Mosby/Elsevier। পৃষ্ঠা 2239। আইএসবিএন 9780323028455।
- ↑ ক খ Laupland KB (জুলাই ২০০৯)। "Fever in the critically ill medical patient"। Crit. Care Med.। 37 (7 Suppl): S273–8। ডিওআই:10.1097/CCM.0b013e3181aa6117। পিএমআইডি 19535958।
- ↑ Manson's Tropical Diseases: Expert Consult। Saunders। ২০০৮। পৃষ্ঠা 1229। আইএসবিএন 9781416044703।
- ↑ Trautner BW, Caviness AC, Gerlacher GR, Demmler G, Macias CG (জুলাই ২০০৬)। "Prospective evaluation of the risk of serious bacterial infection in children who present to the emergency department with hyperpyrexia (temperature of 106 degrees F or higher)"। Pediatrics। 118 (1): 34–40। ডিওআই:10.1542/peds.2005-2823। পিএমআইডি 16818546। পিএমসি 2077849 ।
- ↑ ক খ গ http://www.medicalnewstoday.com/articles/168266.php
- ↑ Hart, BL (১৯৮৮)। "Biological basis of the behavior of sick animals"। Neuroscience and biobehavioral reviews। 12 (2): 123–37। ডিওআই:10.1016/S0149-7634(88)80004-6। পিএমআইডি 3050629।
- ↑ Johnson, RW (২০০২)। "The concept of sickness behavior: a brief chronological account of four key discoveries"। Veterinary immunology and immunopathology। 87 (3–4): 443–50। ডিওআই:10.1016/S0165-2427(02)00069-7। পিএমআইডি 12072271।
- ↑ Kelley, KW; Bluthé, RM; Dantzer, R; Zhou, JH; Shen, WH; Johnson, RW; Broussard, SR (২০০৩)। "Cytokine-induced sickness behavior"। Brain, behavior, and immunity। 17 Suppl 1 (1): S112–8। ডিওআই:10.1016/S0889-1591(02)00077-6। পিএমআইডি 12615196।
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]এই নিবন্ধটি অসম্পূর্ণ। আপনি চাইলে এটিকে সম্প্রসারিত করে উইকিপিডিয়াকে সাহায্য করতে পারেন। |