কালসিয়া রাজ্য
কালসিয়া রাজ্য | |||||||
---|---|---|---|---|---|---|---|
ব্রিটিশ ভারত দেশীয় রাজ্য | |||||||
১৭৬৩–১৯৪৮ | |||||||
১৯১১ সালের পাঞ্জাবের মানচিত্রে কালসিয়া (লাল চিহ্নিত) | |||||||
রাজধানী | ছাছরাউলি | ||||||
আয়তন | |||||||
• ১৯০১ | ৪৩৫ বর্গকিলোমিটার (১৬৮ বর্গমাইল) | ||||||
জনসংখ্যা | |||||||
• ১৯০১ | 67132 | ||||||
ইতিহাস | |||||||
• প্রতিষ্ঠিত | ১৭৬৩ | ||||||
১৯৪৮ | |||||||
| |||||||
বর্তমানে যার অংশ | পাঞ্জাব ও হরিয়ানার অংশ |
কালসিয়া ছিল ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাবের একটি দেশীয় রাজ্য, যা সাবেক সিআইএস-সুতলেজ রাজ্যের অন্যতম। এটি ১৭৬০ সালে মহারাজা গুরবকশ সিং সান্ধু দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। ভারতের স্বাধীনতার পর এটি পেপসুতে (PEPSU) এবং পরে রাজ্য পুনর্গঠন আইন, ১৯৫৬ অনুসারে ভারতের পূর্ব পাঞ্জাবের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কালসিয়া এলাকা এখন ভারতের আধুনিক পাঞ্জাব ও হরিয়ানা রাজ্যে অবস্থিত। ১৯৪০ সালে কালসিয়ার জনসংখ্যা ৬৭,৩৯৩ জন ছিল।[১]
ভূগোল
[সম্পাদনা]কালসিয়ার আয়তন ছিল ৪৩৫ বর্গ কিলোমিটার (১৬৮ বর্গ মাইল), আম্বালা ও ফিরোজপুর জেলার ২০ টি বিচ্ছিন্ন এলাকা নিয়ে এটি গঠিত হয়েছিল, যা প্রধানত ৩০° ১২ উত্তর ও ৩০° ২৫ উত্তরের মধ্যে এবং ৭৭° ২১ পূর্ব থেকে ৭৭° ৩৫ পূর্বের মধ্যে অবস্থিত ছিল।[২] ফিরোজপুর জেলায় এটি তিনটি প্রধান ভাগে বিভক্ত ছিলঃ দুটি তহসিল, ছছরাউলি ও বাসি এবং চিরাক নামে একটি উপ-তহসিল এখানে ১৯০৩ সালে ১৮১ টি গ্রাম ছিল। কালসিয়া রাজ্যের রাজধানী ছিল ছছরাউলি।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]কালসিয়া রাজ্য ১৭৬০ সালে গুরবকশ সিং দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। তিনি শিখ কনফেডারেসির ক্রোরিয়া মিসলে যোগদান করেছিলেন। মহারাজা রঞ্জিত সিং তার সৈন্যদের কমান্ডার এবং কালসিয়া গ্রামের বাসিন্দা মহারাজা গুরবাকশ সিংকে ছছরাউলির সম্পত্তি মঞ্জুর করেছিলেন। মহারাজা গুরবকশ সিং রাজ্যের নাম করণ করেন "কালসিয়া" এবং ছছরাউলি হয়ে ওঠে এর রাজধানী শহর।
মহারাজা গুরবকশ সিং বিখ্যাত ছিলেন না, কিন্তু তার উত্তরসূরি এবং পুত্র যোধ সিং একজন যোগ্য ব্যক্তি হিসেবে খ্যাত হয়েছিলেন। সে সময় কালসিয়া রাজ্যের সম্পূর্ণ এলাকা যমুনা ও মারকান্দা নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চল নিয়ে গঠিত ছিল। যোধ সিং সর্দার খাজান সিং থেকে ডেরা বাসি দখল করেন এবং লোহাল ও আক্রাক অঞ্চল অধিগ্রহণ করেন। যখন মহারাজা রঞ্জিত সিং ১৮০৭ সালে শিবলিকদের নারায়নগড় আক্রমণ এবং দখল করে নেন, যোধ সিং তখন তার সঙ্গে ছিলেন। তার এই সহযোগিতার স্বীকৃতি স্বরূপ রঞ্জিত সিং তাকে বাদলা, কামেরি ও ছাবল অঞ্চল উপহার দেন।
যোধ সিং ১৮১৮ সালে মুলতানে মারা যান। তার মৃত্যুর পর, তার পুত্র সোভা সিং কালসিয়া রাজ্যের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। সোভা সিং, ১৮৫৮ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রাজ্যটি ধরে রাখেন। তার উত্তরসূরি লাহনা সিংকে ১৮৫৭ সালের বিদ্রোহে ব্রিটিশ পক্ষ গুঁড়িয়ে দেয়।
১৮৫৮ সালের পর রাজ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। যখন লাহনা সিং ক্ষমতা গ্রহণ করেন, কালসিয়া অঞ্চল একটি ব্রিটিশ রাজভুক্ত রাজ্য হিসেবে হিসাবে অক্ষত ছিল। রাজ্যের বার্ষিক আয় ছিল প্রায় ৩০০,০০০ রুপি, এবং জনসংখ্যা প্রায় ছিল প্রায় ৬২,০০০ জন। লাহনা সিং এর পর, রঞ্জিত সিং, তারপর তার ছেলে রবি শের সিং, এবং সবশেষে রবি করণ সিং কালসিয়ার ক্ষমতায় আসেন। ১৯১৬ সালে রবেশের সিং নিজেকে রাজা উপাধি দেন। কালসিয়া রাজারা ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত তাদের সম্পত্তি ধরে রাখেন, এরপর এটি ভারতীয় ইউনিয়নের সাথে মিশে যায়।
কালসিয়ায় রঞ্জিত সিং এবং রবি শের সিং উভয়েই দাতব্য হাসপাতাল এবং স্কুল সহ বেশ কয়েকটি পাবলিক ইউটিলিটি ভবন নির্মাণ করেন। রাজা রবি শের নির্মিত কালসিয়া হাসপাতাল ১৯১০ সালে পাঞ্জাবের লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার লুইস উইলিয়াম ড্যানি দ্বারা উদ্বোধন করা হয়েছিল। এ সময়ের পুরাতন আদালত ভবন এখনও ছছরাউলিতে বিদ্যমান। রাজ্যের দেওয়ান 'জনক নিবাস' নামে একটি চিত্তাকর্ষক ভবনে থাকতেন। কালসিয়ারা নিঃসন্দেহে কট্টর নানকপান্ডি ছিলেন।
১৮৯১ সালের ভারতীয় আদমশুমারীর একাদশ ভলিউমে (পর্ব ১) প্রাদেশিক আদমশুমারি অপারেশনের প্রাদেশিক সুপারিনটেনডেন্ট ই ডি ম্যাকলাগান রেকর্ড করেনঃ "প্রায় আশি বছর আগে (অর্থাৎ ১৮১১ খ্রিস্টাব্দে) জৈনপুর গ্রামের বর্তমান লম্বারদারের পিতামহকে কালসিয়ার শিখ প্রধান ধরে নিয়ে গিয়েছিলেন এবং তাঁর সমস্ত আঙ্গুল পুড়িয়ে দিয়েছিলেন, কারণ তিনি নানক যে সত্যিকার গুরু ছিলেন তা স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানান।"[৩]
রাজ্যটি দিল্লি বিভাগের কমিশনারের রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণে ছিল।
শাসকবৃন্দ
[সম্পাদনা]কালসিয়া রাজ্যের শাসকরা নিজেদের 'সর্দার' ও 'মহারাজা' উপাধি দিতেন। যদিও ১৯১৬ সাল থেকে রাজ্যের শেষ প্রধান সহ তারা সকলে 'মহারাজা' উপাধি গ্রহণ করেন।[৪]
সর্দার / রাজা
[সম্পাদনা]- ১৭৬৩ - ১৭৮৫ মহারাজা গুর বকশ সিং (মৃত্যু ১৭৮৫)
- ১৭৮৫ - ১৮১৮ মহারাজা যোধ সিং (জন্ম ১৭৫১ - মৃত্যু ১৮১৮)
- ১৮১৮ - ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৮৫৮ মহারাজা সোভা সিং (মৃত্যু ১৮৫৮)
- ১৮৫৮ - ১৯ ফেব্রুয়ারি ১৮৬৯ মহারাজা লাহনা সিং (মৃত্যু ১৮৬৯)
- ১৮৬৯ - ১০ জুলাই ১৮৮৩ মহারাজা বিশেন সিং (জন্ম ১৮৫৪ - মৃত্যু ১৮৮৩)
- ১৮৮৩ - ১৮৮৬ মহারাজা জাগজিত সিংহ (জন্ম ১৮৮০ - মৃত্যু ১৮৮৬)
- ২৮ আগস্ট ১৮৮৬ - ১৯০৮ মহারাজা রনজিত সিং (জন্ম ১৮৮১ - মৃত্যু ১৯০৮)
- ২৫ জুলাই ১৯০৮ - ১৯১৬ মহারাজা রভিশের সিং (জন্ম ১৯০২ - মৃত্যু ১৯৪৭)
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Columbia-Lippincott Gazetteer, p. 900
- ↑ Imperial Gazetteer of India, v. 14, p. 320.
- ↑ উদ্ধৃতি ত্রুটি:
<ref>
ট্যাগ বৈধ নয়;Rose
নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি - ↑ Princely States of India