এডওয়ার্ড হ্রদ
এডওয়ার্ড হ্রদ | |
---|---|
লুয়া ত্রুটি মডিউল:অবস্থান_মানচিত্ এর 480 নং লাইনে: নির্দিষ্ট অবস্থান মানচিত্রের সংজ্ঞা খুঁজে পাওয়া যায়নি। "মডিউল:অবস্থান মানচিত্র/উপাত্ত/Democratic Republic of the Congo" বা "টেমপ্লেট:অবস্থান মানচিত্র Democratic Republic of the Congo" দুটির একটিও বিদ্যমান নয়। | |
স্থানাঙ্ক | ০°২০′ দক্ষিণ ২৯°৩৬′ পূর্ব / ০.৩৩৩° দক্ষিণ ২৯.৬০০° পূর্ব |
প্রাথমিক অন্তর্প্রবাহ | নিয়ামুগাসানি ইশাশা রুতশুরু রুইন্দি এনতুঙ্গওয়ে লুবিলিয়া |
প্রাথমিক বহিঃপ্রবাহ | সেমলিকি নদী |
অববাহিকা | ১২,০৯৬ কিমি২ (৪,৬৭০ মা২) |
অববাহিকার দেশসমূহ | গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র উগান্ডা |
সর্বাধিক দৈর্ঘ্য | ৭৭ কিমি (৪৮ মা) |
সর্বাধিক প্রস্থ | ৪০ কিমি (২৫ মা) |
পৃষ্ঠতল অঞ্চল | ২,৩২৫ কিমি২ (৮৯৮ মা২) |
গড় গভীরতা | ১৭ মি (৫৬ ফু) |
সর্বাধিক গভীরতা | ১১২ মি (৩৬৭ ফু) |
পানির আয়তন | ৩৯.৫ কিমি৩ (৯.৫ মা৩) |
পৃষ্ঠতলীয় উচ্চতা | ৯১২ মি (২,৯৯২ ফু) |
এডওয়ার্ড হ্রদ, রুতানজিগে বা এডওয়ার্ড নায়াঞ্জা আফ্রিকান মহা হ্রদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট হ্রদ। এটি পূর্ব আফ্রিকান ফাটলের পশ্চিম শাখার আলবার্টিন ফাটলে, গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (ডিআরসি) এবং উগান্ডার মধ্যবর্তী সীমান্তে অবস্থিত, এর উত্তর তীর বিষুবরেখার কয়েক কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।
ইতিহাস
[সম্পাদনা]আমিন পাশা ত্রাণ অভিযানের সময় হেনরি মর্টন স্ট্যানলি ১৮৮৮ সালে এই হ্রদটি প্রথম দেখতে পান। এই হ্রদটির নামকরণ করা হয়েছিল তৎকালীন ব্রিটিশ-শাসক রাণী ভিক্টোরিয়ার পুত্র প্রিন্স অফ ওয়েলস প্রিন্স আলবার্ট এডওয়ার্ডের সম্মানে, যিনি পরে রাজা সপ্তম এডওয়ার্ড হিসাবে পরিচিতি পান।
১৯৭৩ সালে উগান্ডা এবং জায়ারে (ডিআরসি) উগান্ডার একনায়ক ইদি আমিনের নামে হ্রদটির নামকরণ করে ইদি আমিন হ্রদ বা ইদি আমিন দাদা। ১৯৭৯ সালে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর এটি এর পূর্ব নাম ফিরে পায়।
২০১৪ সালে হ্রদটি একটি তেল বিরোধের কেন্দ্রবিন্দু ছিল। সোকো ইন্টান্যাশনাল বিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যানের চত্বরে প্রবেশ করে যেখানে হ্রদে তেল পাওয়ার আশা করা হয়। তবে গ্রামবাসী ও শ্রমিকরা ওই তেল সংস্থাকে ঢুকতে দেয়নি সেখান থেকে তাদের মারধর করা হয়েছিল এমনকি অপহরণ ও নির্যাতন করা হয়। বিরুঙ্গার সীমান্ত রেখা পুনরায় অঙ্কন এবং হ্রদটি বাদ দেওয়ার পরিকল্পনা বিবেচনায় নেওয়া হয়। তবে উদ্যানটি যেহেতু একটি বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান এবং হ্রদ এটির একটি অংশ তাই স্বভাবতই বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্সম্মেলনের বিরুদ্ধে চলে এই জাতীয় পরিকল্পনা।[১]
ভূগোল
[সম্পাদনা]টপোগ্রাফি এবং নিকাশী-ব্যবস্থা
[সম্পাদনা]এডওয়ার্ড হ্রদ ৯২০ মিটার (৩,০২০ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত, এটি সর্বোচ্চ ৭৭ কিলোমিটার (৪৮ মাইল) দীর্ঘ, ৪০ কিলোমিটার (২৫ মাইল) প্রশস্ত এবং এর পৃষ্ঠের আয়তন ২,৩২৫ বর্গকিলোমিটার (৮৯৮ বর্গ মাইল), এটি মহাদেশের ১৫ তম বৃহত্তম হ্রদ। নিয়ামুগাসানি নদী, ইশাশা নদী, রুতশুরু নদী, এনটুংওয়ে নদী এবং রুইন্দি নদীর পানি এই হ্রদে এসে পড়ে। জর্জ হ্রদের পানি উত্তর-পূর্বে খালি কাজিঙ্গা চ্যানেলের মাধ্যমে এই হ্রদে এসে পড়ে। এডওয়ার্ড হ্রদের পানি সেমলিকি নদীর মধ্য দিয়ে উত্তরে অ্যালবার্ট হ্রদে পতিত হয়।
পশ্চিমের মহা ফাটল উপত্যকার খাড়া উঁচু পাহাড় হ্রদটির পশ্চিম তীরে ২,০০০ মিটার (৬,৬০০ ফুট) এর উপরে উঠে এসেছে। দক্ষিণ এবং পূর্ব তীরে সমতল লাভা সমভূমি। হ্রদের ২০ কিলোমিটার (১২ মাইল) উত্তরে রুয়েনজুরি পর্বতমালা।[২]
আগ্নেয়ক্রিয়া
[সম্পাদনা]অঞ্চলটিতে গত ৫০০০ বছর ধরে আগ্নেয়গিরির ক্রিয়াকলাপের অনেক প্রমাণ পাওয়া যায়। ক্যাটউই-কিকোরঙ্গো এবং বুনিয়ারুগুরু আগ্নেয় ক্ষেত্র সাথে বিস্তীর্ণ শঙ্কু এবং জ্বালামুখ হ্রদের উত্তর-পশ্চিম উপকূলে কাজিঙ্গা প্রণালীর দুপাশে অবস্থিত। মনে করা হয় যে জর্জ হ্রদ এবং এডওয়ার্ড হ্রদ একটি বৃহত্তর হ্রদ হিসাবে যুক্ত ছিল, তবে এই ক্ষেত্রগুলি থেকে লাভা প্রবাহিত হয় এবং এটিকে বিভক্ত করে ফেলে, কেবল কাজিঙ্গা প্রণালীটি অতীতের যুক্ত হ্রদের অবশিষ্টাংশ হিসাবে এখনও টিকে আছে। তাপীয়ভাবে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি মে-ইয়া-মোতো ৩০ কিলোমিটার (১৯ মাইল) দক্ষিণে অবস্থিত, এবং পশ্চিম বিরুঙ্গা পর্বতমালার নিয়ামুরাগিরা আগ্নেয়গিরি ৮০ কিলোমিটার (৫০ মাইল) দক্ষিণে অবস্থিত, তবে অতীতে এর লাভা প্রবাহ হ্রদে পৌঁছেছে।[২]
ক্যাটউই-কিকোরঙ্গো ক্ষেত্রে কয়েক ডজন বড় বড় জ্বালামুখ এবং শঙ্কু রয়েছে যা এডওয়ার্ড এবং জর্জের হ্রদের মধ্যে ৩০ কিলোমিটার (১৯ মাইল) × ১৫ কিলোমিটার (৯.৩ মাইল) এলাকা জুড়ে রয়েছে এবং এর মধ্যে সাতটি জ্বালামুখ হ্রদ রয়েছে। এর মধ্যে বৃহত্তমটি ২.৫ কিলোমিটার (১.৬ মাইল) লম্বা ক্যাটউই হ্রদ, ৪ কিলোমিটার (২.৫ মাইল) জুড়ে একটি জ্বালামুখ দখল করেছে এবং এটি এডওয়ার্ড হ্রদ থেকে মাত্র ৩০০ মিটার (৯৮০ ফুট) ভূমি দ্বারা পৃথক হয়েছে। জ্বালামুখটি প্রায় ১০০মিটার (৩৩০ ফুট) গভীর এবং ক্যাটউই হ্রদের পৃষ্ঠতল এডওয়ার্ড হ্রদ থেকে প্রায় ৪০ মিটার (১৩০ ফুট) নীচু। এটি লক্ষণীয় যে ৮৯৪ সালে জি. এফ. স্কট এলিয়ট দ্বিবরণ না দেওয়া পর্যন্ত রুয়েনজুরিসের দক্ষিণ-পূর্বে এই অঞ্চলের আগ্নেয়গিরির উৎস জানা যায়নি। স্ট্যানলি ১৮৮৯ সালে ক্যাটউই হ্রদে গিয়েছিলেন এবং গভীর হতাশা ব্যক্ত করেছেন, হ্রদের লবণাক্ততা এবং কাছাকাছি সালফিউরাস পানির একটি ঝর্ণার উল্লেখ করেছেন, তবে তিনি এটিকে আগ্নেয়গিরির সাথে সংযোগ মেলাতে ব্যর্থ হন।[৩]
নিরক্ষীয় আফ্রিকা, এডওয়ার্ড হ্রদের চাপদন্ডের অন্তস্তলে ক্যালসাইট এবং বায়োজেনিক সিলিকা (বিএসআই) উপাদান প্রাথমিক রচনার উচ্চ-রেজোলিউশন বিশ্লেষণ করে, গত ৫৪০০ বছর ধরে জলবায়ু পরিবর্তনশীলতা এবং হৃদে সৃষ্ট ভূ-রসায়নের মধ্যে জটিল মিথস্ক্রিয়া নথিভুক্ত করে। [৪]
কাজিঙ্গা প্রণালীর অপর প্রান্তে অনুরূপ আকারের বুনিয়ারুগুরু ক্ষেত্রে প্রায় ৩০ টি জ্বালামুখ হ্রদ রয়েছে, যার কয়েকটি ক্যাটউইয়ের চেয়ে বড়।
জনবসতি
[সম্পাদনা]এডওয়ার্ড হ্রদ সম্পূর্ণরূপে বিরুঙ্গা জাতীয় উদ্যান (কঙ্গো) এবং রানী এলিজাবেথ জাতীয় উদ্যান (উগান্ডা) এর মধ্যে অবস্থিত এবং উত্তরের ইশাঙ্গোতে (ডিআরসি) উদ্যান বনরক্ষী প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা ব্যতীত এর তীরে বিস্তৃত জনবসতি নেই। এর পানির প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ ডিআরসি এবং এক তৃতীয়াংশ উগান্ডার। ইশাঙ্গো ছাড়াও দক্ষিণের প্রধান কঙ্গোলীয় বসতিটি হলেন ভিতশুম্বী, উগান্ডার জনপদগুলি উত্তর-পূর্বের মুয়েয়া এবং ক্যাটউই, একই নামের জ্বালামুখ হ্রদের নিকটে, এটি উগান্ডার লবণের প্রধান সরবরাহকারী। এর নিকটতম শহরগুলি হলো উত্তর-পূর্বে উগান্ডার ক্যাসেস এবং উত্তর-পশ্চিমে ডিআরসির বুতেম্বো, এগুলি সড়ক পথে যথাক্রমে প্রায় ৫০ কিলোমিটার (৩১ মাইল) এবং ১৫০ কিলোমিটার (৯৩ মাইল) দূরে অবস্থিত।[৫]
বাস্তুসংস্থান
[সম্পাদনা]এডওয়ার্ড হ্রদ বাগ্রুস ডকম্যাক, ওরিওক্রোমিস নাইলোটিকাস, ওরিওক্রোমিস লিউকোস্টিকটাস এবং ৫০ টিরও বেশি প্রজাতির হ্যাপ্লোক্রোমিস এবং অন্যান্য হ্যাপ্লোক্রোমাইন প্রজাতির মাছের বাসস্থান, এদের মধ্যে কেবল ২৫ টির আনুষ্ঠানিকভাবে বর্ণানা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মৎস শিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশা। শিম্পাঞ্জি, হাতি, কুমির এবং সিংহ সহ হ্রদের তীরে বাস করা প্রাণিকুল জাতীয় উদ্যান কর্তৃক সংরক্ষিত। এই অঞ্চলে অনেক বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ এবং পরিযায়ী পাখির প্রজাতি রয়েছে।
২০১৮ এডওয়ার্ড হ্রদ খণ্ডযুদ্ধ
[সম্পাদনা]২০১৮ সালের ৬ জুলাই এডওয়ার্ড হ্রদে উগান্ডা এবং গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের মধ্যে নৌ সংঘর্ষ ঘটে। উগান্ডার নৌবাহিনী বেশ কয়েকটি কঙ্গোলীয় মাছ ধরার জাহাজ এবং বেসামরিক নাগরিককে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর তদন্ত করতে কঙ্গোলীয় সামরিক জলযান পাঠানোর ফলে এই সংঘাত শুরু হয়েছিল। এই সংঘর্ষের ফলে একজন নিহত এবং আরও তিন জন আহত হয়েছিল।[৬][৭]
স্থানীয় কঙ্গোলীয় কর্মকর্তাদের প্রাথমিক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে সংঘর্ষে সাতজন নিহত হয়েছে, তবে জাতীয় সরকার এটি সমর্থন করেনি।[৮] ৯ জুলাই উত্তর কিভুর কর্মকর্তা মুহিন্দো কেয়াকাওয়া দাবি করেন যে সংঘর্ষে বারোজন কঙ্গোলীয় জেলে মারা গিয়েছিল।[৯]
তথ্যসূত্র
[সম্পাদনা]- ↑ Gettleman, Jeffrey (২০১৪-১১-১৫)। "Oil Dispute Takes a Page From Congo's Bloody Past"। The New York Times (ইংরেজি ভাষায়)। আইএসএসএন 0362-4331। সংগ্রহের তারিখ ২০১৭-১২-২১।
- ↑ ক খ Google Earth/Geographic Features/Volcanoes
- ↑ Holmes, A. and Harwood, H.F. (1932) "Petrology of the Volcanic Fields East and South-East of Ruwenzori, Uganda", Quarterly Journal of the Geological Society, 88 (1-4), p. 370–442, ডিওআই:10.1144/GSL.JGS.1932.088.01-04.16
- ↑ Russell, James M.; Johnson, Thomas C. (জুলাই ২০০৫)। "A high-resolution geochemical record from Lake Edward, Uganda Congo and the timing and causes of tropical African drought during the late Holocene"। Quaternary Science Reviews। 24 (12–13): 1375–1389। আইএসএসএন 0277-3791। ডিওআই:10.1016/j.quascirev.2004.10.003।
- ↑ Carte Routière et Touristique Michelin (1996) Afrique Nord-Est et Arabie, map scale 1:4 000 000, Paris : Pneu Michelin
- ↑ "One killed, three wounded after clashes near Congo-Uganda border"। Reutesrs। জুলাই ৬, ২০১৮। নভেম্বর ২৯, ২০১৮ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২০।
- ↑ "One killed, three wounded after clashes near Congo-Uganda border"। africanews.com। জুলাই ৭, ২০১৮।
- ↑ "Uganda and DR Congo clash on Lake Edward"। Club of Mozambique। BBC। জুলাই ৬, ২০১৮।
- ↑ "Uganda and Congo forces clash in Lake Edward dispute"। Deutsche Welle। জুলাই ১০, ২০১৮।
"The 12 bodies of our compatriots are still floating on Edward Lake," said Muhindo Kyakwa, a senior Congolese official of the province of North Kivu.
বহিঃসংযোগ
[সম্পাদনা]- জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ১৪ মার্চ ২০০৮ তারিখে
- বিশ্ব হ্রদ ডাটাবেস ওয়েব্যাক মেশিনে আর্কাইভকৃত ৪ মার্চ ২০১৮ তারিখে