[go: up one dir, main page]

বিষয়বস্তুতে চলুন

একসংকর জনন

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে

একসংকর জনন (ইংরেজি: Monohybrid cross) বংশগতি বিদ্যার একটি সুপরিচিত অধ্যায়। একজোড়া বিপরীত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন একই প্রজাতির দুটি জীবের মধ্যে সংকরায়ন ঘটানো হলে, তাকে একসংকর জনন বলে।[][] এটি ঘটানোর জন্য একজোড়া বিপরীত চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন একই প্রজাতির দুটি জীব নেওয়া হয়, যারা হোমোজাইগাস প্রকৃতির হয়।

উদাহরণ

[সম্পাদনা]

উপরের ছবিতে লাল আর সাদা রং বিশিষ্ট দুটি জীবের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটানো হয়েছে। এখানে লাল প্রকট বৈশিষ্ট্য ও সাদা প্রচ্ছন্ন বৈশিষ্ট্য

  • 1 দ্বারা জনিতৃ জনু (Parental generation বা P জনু) বোঝানো হয়েছে।
  • 2 দ্বারা প্রথম অপত্য জনু (First filial generation বা F1 জনু) বোঝানো হয়েছে।
  • 3 দ্বারা দ্বিতীয় অপত্য জনু (Second filial generation বা F2 জনু) বোঝানো হয়েছে।

P জনুর মধ্যে লাল বর্ণের জীবটির জিনোটাইপ RR ও সাদা বর্ণের জন্য WW। এখানে R প্রকট অ্যালিল ও W প্রচ্ছন্ন অ্যালিল। সংকরায়ণের ফলে উৎপন্ন প্রতিটি অপত্যতে (F1) RW জিনোটাইপে R প্রকট হওয়ার জন্য লাল রঙের প্রকাশ ঘটেছে।

আবার F1 জনুর দুটি অপত্যের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটানোর ফলে F2 জনুতে জিনগত সমাহার অনুযায়ী ৭৫% লাল ও ২৫% সাদা রঙের জীব তৈরী হয়েছে।

ব্যবহার

[সম্পাদনা]

এটি মূলত দুটি অ্যালিলের মধ্যে কোনটি প্রকট তা নির্ধারণে সাহায্য করে।

ফিনোটাইপ ও জিনোটাইপ

[সম্পাদনা]

সংকরায়ণের পর জীবের বহিরাকৃতি বা বাইরে প্রকাশিত লক্ষণকে ফিনোটাইপ বলে। কিন্তু সংকরায়ণের পর জাইগোট এর মধ্যের উপাদান বা জিন ঘটিত লক্ষণ কে জিনোটাইপ বলা হয়। ফিনোটাইপ অনুপাত = ৩:১ এবং জিনোটাইপ অনুপাত = ১:২:১ []

মেন্ডেলের পরীক্ষা

[সম্পাদনা]

বিজ্ঞানী গ্রেগর জোহান মেন্ডেল মটর গাছ (Pisum sativum) নিয়ে গবেষণা করেন ও বহু বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে একসংকর জনন সম্পন্ন করেন। বৈশিষ্ট্যগুলি ছিল:

বৈশিষ্ট্য প্রকট প্রচ্ছন্ন
উচ্চতা লম্বা বেঁটে
ফলের আকৃতি নিটোল/পরিপুষ্ট কুঞ্চিত
ফলের রং সবুজ হলুদ
ফুলের রং বেগুনি সাদা
ফুলের অবস্থান কাক্ষিক অগ্রস্থ
বীজের রং হলুদ সবুজ
বীজের আকৃতি গোলাকার কুঞ্চিত

এদের প্রত্যেকটিকে নিয়ে একসংকর জনন সম্পন্ন করা সম্ভব।

P জনু

জনিতৃ জনুতে মেন্ডেল দুটি উদ্ভিদ নেন, যাদের একটির উচ্চতা অপরটির তুলনায় বেশি। দুটোই হোমোজাইগাস প্রকৃতির হবার জন্য লম্বা উদ্ভিদের জিনোটাইপ TT ও বেঁটে উদ্ভিদের জিনোটাইপ tt। ছক অনুসারে T (লম্বা) প্রকট ও t (বেঁটে) প্রচ্ছন্ন অ্যালিল। দুটির যেকোনো একটিকে স্ত্রী ও অপরটিকে পুংলিঙ্গের নেওয়া হল। এদের মধ্যে সংকরায়ণ ঘটানো হলে প্রথম অপত্য জনু সৃষ্টি হয়।

P জনুর গ্যামেট
(লম্বা)
P জনুর
গ্যামেট
(বেঁটে)
T T
t Tt Tt
t Tt Tt
ফলাফল: ১০০% সংকর লম্বা
F1 জনু

প্রথম অপত্য জনুতে প্রতিটিই Tt (হেটেরোজাইগাস) হল। T প্রকট হবার জন্য প্রতিটিই লম্বা হল। এবার Tt প্রকৃতির দুটি বিপরীত লিঙ্গের উদ্ভিদ নিয়ে সংকরায়ণ করা হল। ফলাফল নীচের চেকার বোর্ডে দেখা যাবে:

F1 জনুর গ্যামেট
F1 জনুর
গ্যামেট
T t
T TT Tt
t Tt tt
ফলাফল:
২৫% বিশুদ্ধ লম্বা
৫০% সংকর লম্বা
২৫% বিশুদ্ধ বেঁটে
F2 জনু

উপরের চেকার বোর্ড থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে,

  • ফিনোটাইপিক অনুপাত = লম্বা:বেঁটে = ৩:১
  • জিনোটাইপিক অনুপাত = বিশুদ্ধ লম্বা:সংকর লম্বা:বিশুদ্ধ বেঁটে = ১:২:১

অন্যান্য ব্যবহার

[সম্পাদনা]

ব্যতিক্রম

[সম্পাদনা]

গুরুত্ব

[সম্পাদনা]

মেন্ডেল এখান থেকে তার পৃথকভবনের সূত্র পান।

আরও দেখুন

[সম্পাদনা]

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. Solomon, Eldra Pearl; Linda R. Berg; Diana W. Martin (ফেব্রুয়ারি ২০০৪)। Biology। Cengage Learning। আইএসবিএন 978-0-534-49276-2 
  2. Campbell, Neil A. (২০০৬)। Biology: concepts & connections। Pearson/Benjamin Cummings। আইএসবিএন 978-0-8053-7160-4 
  3. মাধ্যমিক জীবন বিজ্ঞান, দ্বিতীয় খণ্ড: তুষারকান্তি ষন্নিগ্রহী, শ্রীভূমি পাবলিশিং কোম্পানি, কলকাতা, বছর:১৯৮৬